#CallForWriting2022
Position : 9th

আমার বরাবরই কুকুর, বিড়াল অপছন্দ ছিলো। এই বৈশিষ্ট্যটি থেকে যেতো যদি না আমাদের পরিবারে Thank You আসতো। ও আচ্ছা বলাই হয় নি, Thank You আমাদের পোষা বেড়ালটির নাম ছিলো। ঠিক আমাদের বললে ভুল হবে, আসলে আমার ছোটো ভাইয়ের। তখন লকডাউন চলছিলো, তানভীর হঠাৎ একদিন বাহির থেকে একটি বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে হাজির। আম্মুতো বেজায় রাগ।আমিও আম্মুর সাথে তাল মিলিয়ে বলতে থাকলাম এসব কুকুর বিড়াল ঘরে রাখা যাবে না এসবে অনেক জার্ম ব্যাকটেরিয়া থাকে।কিন্তু তানভীর অনেক অনুনয় বিনয় করে আম্মুকে রাজি করতে সক্ষম হয় কিন্তু তাও শর্ত সাপেক্ষে। বিড়ালটির সম্পূর্ণ দেখাশোনা করার দায়িত্ব তানভীরের। তারপর বেশ অনেকদিন পার হয়ে যায় কিন্তু ওর কোনো নাম তখনও দেওয়া হয় নি। আসলে প্রয়োজন পরে নি, কারন ওকে নাম ধরে ডেকে আদর করার মতো কেউই ছিলো না তানভীর ছাড়া। আর তানভীর ইশারা করলেই ওর কাছে এমনিই চলে যেতো। মাঝে মাঝে হঠাৎ ছুটে এসে বলতো আপু দেখো না ও কত কিউট!আমার আসলে এসব কুকুর বিড়াল দেখে কখনো মুখ দিয়ে কিউট শব্দটা বের হয় নি। কিউট আবার কি,,এদের শরীরে শুধু জার্ম আর ব্যাকটেরিয়া। এমনই মনে হতো আমার। কিন্তু বিড়ালটি তাও আমার পিছে পিছে ঘুরতো। কি এক ঝামেলা। আমি দুধ খেতে পছন্দ করতাম না বলে ওকেই দিয়ে দিতাম বেশিরভাগ সময়। এজন্যই হয়তো ও আমাকে ভালোবেসে ফেলে। দেখাশোনা করার দায়িত্ব প্রথমাবস্থায় তানভীরের ওপর একনিষ্ঠ ভাবে অর্পিত থাকলেও ধীরে ধীরে সবার মনেই জায়গা করে নেয়।বিশেষ করে আমার।আমি কখনো ভাবি নি যে আমি বিড়াল পছন্দ করা শুরু করবো। একদিন হঠাৎ কি হলো জানি না বিড়ালটি অসুস্থ হয়ে গেলো। কি করবো আমি আর তানভীর কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। বিড়ালের ঠান্ডা লাগলে কি করে,কিছুই জানতাম না। আবার চলছিলো লকডাউন। কোনো ভেট এর কাছেও যেতে পারছিলাম না। আস্তে আস্তে ওর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলো। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম কিন্তু ও আর সুস্থ হলো না। ৭ অক্টোবর ২০২০ ও আমাদের ছেড়ে চলে যায় চিরতরে। সেদিন আমি বুঝেছিলাম ভালোবাসি না বলে চিল্লাতে থাকা আমি ঠিক কতটা ওকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম।আমার বারবার মনে শুধু ওর স্মৃতি ভেসে বেড়াচ্ছিলো। ওর এসে বসে থাকা। দেখলেই ছুটে চলে আসা।আমি সত্যিই মিস করছিলাম। ওকে যে আমার ভালো করে আদর করাই হয় নি তার আগেই চলে গেলো। সেদিনের সেই অসহায়ত্ব থেকেই আজ ডিভিএম এ পড়তে চাওয়া যেনো আর কাউকে তাদের পছন্দের বিড়ালকে না হারাতে হয়। আমি কখনো ভাবি নি যে ওর সম্পর্কে কখনো এভাবে লিখতে পারবো। ধন্যবাদ প্রাধিকারকে সে সুযোগ টি করে দেওয়ার জন্য। বিড়ালটি আমাদের পরিবারের এতো খেয়াল রাখতো যে তাই ও মারা যাওয়ার পর আমি ওর নাম দিয়েছি THANK YOU।

লেখকঃ
Nurshat Jahan Tonny
DVM, SAU


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *