#CallForWriting2022
স্থানঃ ২য়

রুটিন ভিজিটে বেরিয়ে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে একবার ঘুরে গেছে স্থানীয় পুলিশের ভ্যান। চোখে পড়েছে সবটাই কিন্তু ধর্ষকরূপে শাসক নেতার পুত্র আর ধর্ষিতার স্থানে পিছিয়ে পড়া আদিবাসী মেয়েকে দেখে এগোনোর আর উৎসাহ পাননি দায়িত্বপরায়ণ ডিএসপি সাহেব স্বয়ং। উপরন্তু , অধীনস্থ অফিসার রাইফেলটা কোমর থেকে বের করতে গেলে বদলির ভয়ে তেঁড়েফুড়ে আঁকড়ে ধরলেন তার হাত। কর্মচারীসমেত ধাবার মালিক পুরো ঘটনাটার ভিডিও করে মজা লোটার রসদ পেলেও কিছু বলার সাহস করে উঠতে পারলেন না লাইসেন্স খোয়ানোর ভয়ে।

বছর ষোলোর শীর্ণকায় মেয়েটাকে খড়ের গাঁদায় ছুঁড়ে ফেলে ঝাঁপিয়ে পড়ল ওরা চারজন। প্রায় পনেরো মিনিট ধরে আত্মরক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা চালানোর পর বাধা দেওয়ার ন্যূনতম শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছে ঝুমা। টিউশন ফেরত আদিবাসী মেয়েটাকে রাস্তার অন্ধকারে আচমকাই পিছন থেকে গাড়িতে তুলে নেয় শাসক দলের প্রভাবশালী নেতার পুত্র ও তার তিন বন্ধু। গাড়িতে যথেচ্ছ অত্যাচারের পরও আশ মেটে না ওদের। ধাবার পিছনের মাঠে এসে থামল দুধ সাদা সুমো। কাজ শেষে তৃপ্তির চোঁয়া ঢেকুর তুলে এরপর জ্বালিয়ে দেওয়ার পালা।

দুপাশে সমবেত তোষামোদি জনতা তখন বিনা পয়সার উত্তেজনা উপভোগে ব্যস্ত। টিটকিরিও উড়ে আসছে দুয়েকটা। তারই মাঝে ভিড় ঠেলে হঠাৎ এগিয়ে এল ওরা দুজন। নিলু প্রাণভয়ে পিছিয়ে যেতে চাইলেও লালুর জোরাজুরিতে শেষমেষ দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়েই পড়ল খড়ের গাঁদায়। আঁচড়ে রক্তাক্ত করল গাল। পুলিশের সামনেই কামড় বসাল যৌনাঙ্গে। বাকরুদ্ধ স্তাবক পুলিশ। স্তম্ভিত নির্বাক নাগরিক। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে ঝুমাকে ছেড়ে পালিয়ে গেল ওরা চারজন। মানুষের লালসার হাত থেকে শেষমেষ বেঁচে গেল মেয়েটা। ধাবা পেরিয়ে হাইওয়ে ধরে ঘেউঘেউ করতে করতে ছুটছে ফুটপাতের দুই কুকুর — লালু আর নিলু। বছর তিনেক আগে পথ চলতি ঝুমা ওদের এক প্যাকেট করে বিস্কুট খাইয়েছিল যে….

লেখকঃ Chiranjit Saha
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *