#CallForWriting2022
Position : 7th

সকাল সকাল মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙল। ষাঁড় দুইটি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ঘুম ঘুম চোখে রুম থেকে বের হয়ে দেখতে গেলাম কি হলো,ততক্ষণে কিছু চিকিৎসাও দেওয়া হয়ে গেছে। দুপুর হয়ে যাচ্ছে, অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না বরং আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। তা দেখে আমি বৃষ্টির মধ্যেই বের হলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। ডাক্তার নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিছু পথ আসার পর বাড়ি থেকে ফোনকল এলো,কালো ষাঁড় টা মারা গিয়েছে। এক মূহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলাম। নিজেকে সামলে নিয়ে ডাক্তার নিয়ে বাড়ি ফিরছি, সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও যদি লাল ষাঁড় টাকে বাঁচানো যায় সেই আশায়। ডাক্তার চিকিৎসা দিয়ে চলে গেলেন। পরিবেশ মৃত বাড়ির মতো অবস্থা ধারন করেছে।

সারা বিকাল গড়িয়ে রাত হলো,কারো চোখে কোনো ঘুম নেই, খাওয়া দাওয়া নেই। অন্তত দ্বিতীয় ষাঁড়টা যেন বেঁচে থাকে, সেই আশায় একটু পরপর ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করছি, কি করা লাগবে তা জানতে। অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না দেখে, বাবা পরদিন সকাল হতেই বের হলেন আবার ডাক্তারকে নিয়ে আসতে। ক্রমেই ষাঁড়টির অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে, কিছুই করতে পারছি না। করোনার ছুটিতে বাড়িতে থেকে ষাঁড় দুটির দেখাশোনা করা, যত্ন করার কারণে, অনেক বেশি মায়া জমে গিয়েছিল।
চোখের সমানে গরুটা পড়ে ছটফট করতে করতে মারা গেল। কান্নায় লুটিয়ে পড়েছিলাম।

চোখের সামনে বড় বড় দুটি ষাঁড় মারা গেল রুমিনাল এসিডুসিস এর কারণে, কিছুই করতে পারলাম না। সেদিন রুমিনাল এসিডুসিস সম্পর্কে ততটা ধারনা না থাকলেও, ঐদিনের পর থেকে যতবার এই শব্দটা চোখে পড়ে,আজও মনের অজান্তেই একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস চলে আসে। ষাঁড় দুটি নেই কিন্তু তাদের প্রতি মায়াটা আজও রয়ে গেছে।

লেখকঃ
Ayesha Siddika,
DVM, SAU


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *