মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার ঠিক পরেই তার আগমন ঘটে। যখন পরিবেশটা স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় থাকে,চারিদিকে জনকোলাহল শূণ্য তখন সে নিঃশব্দে আসে। তার পছন্দের খাদ্য বলতে ছোট ছোট কচি মুরগি। বাঁশঝাড়ের মধ্য দিয়ে চুপি চুপি এসে সে আশেপাশের বাড়ির মুরগি গুলো ধরে খায়। বৃষ্টি আসলে এটা যেন তার অত্যাবশ্যকীয় কাজ। তার চালাকিতে গ্রামের সব মুরগির খোপ আজকে শুন্য। গ্রামের মানুষ অনেকটাই ক্ষতির সম্মুখে। আশপাশে তেমন আর কোনো মুরগি নাই।
প্রতিবারের মতো এইবারও বৃষ্টির পরে সে হাজির। সে মুরগি খুঁজছে, কিন্তু আশেপাশে কোনো মুরগি নেই।কারণ এইবার গ্রামের লোকজন পরিকল্পনা করেই রেখেছিলো তাকে আজ উচিত শিক্ষা দিবে। আসতে আসতে লোকজন চতুর্দিক থেকে তাকে ঘিরে নিলো। সে এখন পথহারা পথিক।হঠাৎ কোনো একদিক থেকে ধনুকের তীক্ষ্ণ তীর তার গায়ে এসে লাগলো। সে প্রস্তুত ছিল না, মুহূর্তেই সে মাটিতে নুয়ে পড়লো।তার বুক থেকে রক্ত ঝড়ছে, কিছুক্ষনের জন্য সে অন্ধকার দেখতে লাগলো, একটু পর চোখ খুলে দেখলো তার চারিদিকে সারা গাঁয়ের লোকজন ভিড় করে আছে। তার নিঃশ্বাস আর বেশিক্ষণ টিকলো না। গ্রামের মানুষজন তাকে সেই বাঁশঝাড়ের পাশেই সমাহিত করা হলো।
যাই হোক,এতক্ষন যার কথা বললাম তার পরিচয় দেওয়াই হয়নি। তিনি অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী,তাকে এক নামে সবাই চিনে। তাকে বলা হয়,বনের সবচেয়ে চালাক প্রাণী। তাকে সহজেই কেও ঘায়েল করতে পারেনা।
বোকা বানানো যার কাম,শিয়াল তার নাম।
অতঃপর গ্রামের মানুষজন শত শত মুরগি নিয়ে সুখ খোঁজার চেষ্টা করলো। তারা মুরগি এবং মুরগির ডিম বেঁচে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। প্রাপ্ত টাকা দিয়ে সংসারের একটু হলেও উন্নতি হবে। কিন্তু হঠাৎ এক খারাপ হাওয়া মানুষের সকল স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন করে দিলো। মুরগির শরীরে অসুখের লক্ষণ। রানিক্ষেত রোগ নিমিষেই সব মুরগির জান কেঁড়ে নিলো। ভয়ংকর এই ছোঁয়াচে রোগ মুরগির জান কেঁড়ে নেওয়াতে পটু।
অসহায় গ্রামের মানুষ হায় হায় করতে লাগলো। হাহাকার করছে সারা গ্রাম। এই যেন সোনালী ধান ঘরে তোলার আগেই পঙ্গপালের দল ফসল নষ্ট করে দিয়ে গেলো। কথায় আছে,যাহার একূল নাই,তাহার ওকূলও নাই।
শিক্ষণীয়:প্রাণী তার আহার মিটানোর জন্য খাবার খেতে আসবেই। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তাই বলে আমরা প্রাণী হত্যা করতে পারিনা। আমাদের উচিত প্রাণী হত্যা না করে নিজেদের জিনিস নিজেদেরই সামলিয়ে রাখা।
ঠিকানা: হোসেনীগঞ্জ, বোয়ালিয়া,রাজশাহী। পোস্ট:GPO-6000
0 Comments